খুলনা বিভাগে একদিনে ৩০ জনের মৃত্যু।
-
আপডেট সময় :
রবিবার, ২০ জুন, ২০২১
-
৪০৪
০ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ
রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ৯ জেলায় করোনা ও উপসর্গে গেল ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে ১০ জন এবং খুলনা বিভাগে ২৪ জন মারা গেছেন।
দুই বিভাগের জেলাগুলো হলো-রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ। এর মধ্যে শুধু কুষ্টিয়া জেলাতেই অদৃশ্য এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ জন।
এসব জেলায় এলাকাভিত্তিক লকডাউন ও বিধিনিষেধ জারি করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা করছেন না। কারও কারও মুখে মাস্ক পর্যন্ত দেখা যায় না।
ফলে ভারত সীমান্তবর্তী এসব জেলায় সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। এর আগে ১৭ জুন ওই দুই বিভাগের ১২ জেলায় মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন। এদিকে বগুড়া পৌরসভাসহ সদর উপজেলা ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শনিবার থেকে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
খুলনা জেলা ও মহানগরীতে ফের সাত দিনের লকডাউন দেওয়া হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ ও অক্সিজেন সংকটে দিশেহারা কর্তৃপক্ষ। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
খুলনা : গেল ২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগে মারা গেছেন ২২ জন। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় ১০ জন, খুলনায় ৩ জন, সাতক্ষীরায় ৯ জন, যশোরে ৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় ২, মেহেরপুরে ২ জন ও ঝিনাইদহে একজন। একই সময়ে বিভাগে ৬২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। তবে শুক্রবার মারা যান ৮ জন।
এদিকে আগামী ২২ জুন থেকে ফের সাত দিনের জন্য খুলনা জেলা ও মহানগরীতে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন ছাড়া কোনো গণপরিবহণ খুলনায় প্রবেশ করতে বা বের হতে পারবে না। শনিবার দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা ইউনিটে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃত ১০ জনের মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। আর সাতজন ভর্তি ছিলেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। মৃতদের মধ্যে পাঁচজন রাজশাহীর এবং বাকিরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের। এ নিয়ে চলতি মাসের ১৯ দিনে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৯৩ জন।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১০ জন। তাদের সবাই করোনা পজিটিভ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদের মধ্যে ৩ জনের বাড়ি কুষ্টিয়া পৌর এলাকায়। বাকি ৮ জনের বাড়ি সদর, কুমারখালী, খোকসা, ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে। একই সময়ে জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১২ জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় প্রশাসন শুধু পৌর এলাকায় বিধিনিষেধ জারি করেছে। যার ফলে গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষ কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।
সাতক্ষীরা : জেলাব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণার পরও সাতক্ষীরায় কমছে না করোনা সংক্রমণের হার। শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৬ জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৬০.৯ শতাংশ। একই সময়ে করোনায় ১ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আফম রুহুল হক এমপি সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত করোনা সচেতনতামূলক শোভাযাত্রায় তিনি এসব কথা বলেন।
বগুড়া : শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সাত দিনের জন্য বগুড়া পৌরসভাসহ সদর উপজেলায় সাত দিনের সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দুপুরে এক প্রজ্ঞাপনে জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক এ তথ্য জানান। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, মার্কেট, দোকান বন্ধ থাকবে, সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাবারের দোকান খোলা থাকবে, হোটেল-রেস্তোরাঁ খাদ্য বিক্রি ও সরবরাহ করবে, সব ধরনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং গণজমায়েত বন্ধ থাকবে, কোনো যানবাহন শহরে প্রবেশ ও বের হতে পারবে না, দূরপাল্লার বাস হাইওয়ে ব্যবহার করবে, সাপ্তাহিক হাট বন্ধ, সব পর্যটন স্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : কালীগঞ্জসহ জেলার ৬টি পৌর এলাকায় শনিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ কমিটি। কিন্তু পৌর এলাকায় বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না কেউ। স্বাভাবিক সময়ের মতোই শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন লোকজন। অধিকাংশ মানুষের মুখে নেই মাস্কও।
ফরিদপুর : জেলায় ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় আক্রান্ত হন ৫৭ জন। ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দীকুর রহমান জানান, জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৪০৭ জন, মারা গেছেন ১৯৯ জন।
ঝিনাইদহ : অক্সিজেন সংকটে সদর হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তেমনটি হলে চরম বিপর্যয় দেখা দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ। তিনি জানান, বর্তমানে কোভিড-ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৬ জন।
গেল ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। এ অবস্থায় হাসপাতালটির অন্যান্য চিকিৎসাসেবা চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে অর্থোপেডিকসহ কয়েকটি বিভাগের নিয়মিত অপারেশন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে আরও একটি করোনা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে।
জয়পুরহাট : শনিবার দুপুরে জয়পুরহাট পুলিশ লাইন
Like this:
Like Loading...
নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
Leave a Reply