মেহেন্দিগঞ্জের চানপুরে খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করেন মাইনুদ্দিন।
-
আপডেট সময় :
বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩
-
১২৮
০ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

রাজিব তাজ //
বরিশালে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চানপুর ইউনিয়নে খাল দখন করে পাকা ভবন নির্মাণ’র অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নদী-খাল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও খালের ওপর ভবন নির্মাণ করার ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কিছুদিন পূর্বে নসীর আহম্মেদ শাহ’র ছেলে মোঃ মাইনুদ্দিন জমিটি ক্রয় করে কোন রকমের মাপজোখ না করেই খালের মধ্যের জমি প্রভাব খাটিয়ে অধিগ্রহণ করেন এবং ভবন নির্মান করার পায়তারা করেন, এলাকার গুটিকয়েক বাধা দিলেও আমলে নেন নি প্রভাবশালী মোঃ মাইনুদ্দিন, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভবন নির্মাণ করেন খালের জমির উপর।
সূত্রে জানা যায় যে, উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের ০২ নং ওয়ার্ডের মন্নান মোল্লার বাড়ির পাশে, পশ্চিম চানপুর মসজিদ বরাবর খালের পশ্চিম পাড়, মাস্টার রমিজ উদ্দিন’র বাড়ির সামনে, ইব্রাহিম’র গ্যারেজ সংলগ্ন স্থানে সরকারি খাল দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করেন স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ মাইনুদ্দিন।
এদিকে, মাস্টারের হাট বাজারে খালের জায়গা দখল করে গড়ে উঠা বাণিজ্যিক ভবনসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে উপজেলা প্রশাসন, এতেও থেমে থাকে নি প্রভাবশালী মোঃ মাইনুদ্দিন। ফলে উপজেলার মাস্টারের হাট বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহমান খালটি নাব্যতা সংকট, অবৈধ দখল আর অপরিচ্ছন্নতার কারণে এখন নালায় পরিণত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুকনো মৌসুম হওয়ায় খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ার সুযোগে খালটির পাড় থেকে ভেতরের দিকে প্রায় বেশিরভাগ অংশ নিয়ে গ্রেট ভিম দিয়ে কংক্রিটের পিলার ও ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। এসব স্থাপনা নির্মাণের জন্য খালের প্রায় এক তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করা হয়েছে।
নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, এখানে যখন এই ভবন নির্মাণ করার কথা বলছে আমাদের সাথে, তখন আমরা বলেছি, সরকারি খাল বাদ দিয়া করেন, পরে ঝামেলা হইতে পারে, কিন্তু আমাদের কথা শুনে নাই, আরো আমাদের বলছে, আপনারা কাজ করেন, কাজ করবেন, বাড়তি কথা বলার দরকার নাই।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারের মালিকানা চানপুর ইউনিয়নের ০২ ওয়ার্ডের মৌজা ম্যাপের ১৪১১ নং দাগের খাল শ্রেণীর জমি অবৈধভাবে দখল করে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন দখলদার মোঃ মাইনুদ্দিন।
মাস্টারের হাট বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, মাস্টারের হাট বাজারের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র পথ খালটি। এভাবে দখলের কারণে এটি অনেকটাই ছোট হয়ে এসেছে। এর মধ্যে মোঃ মাইনুদ্দিন খালের জমি দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যহত হবে। সরকারি খাল এভাবে দখল হলেও প্রশাসনের নজরদারি নেই। তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কেউ কাজে বাধা দিতেও সাহস পাচ্ছেন না।
এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ জনগণের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এভাবে যদি প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করা হয় তাহলে একটা পর্যায়ে সরকারি সম্পত্তি আর থাকবে কোথায়? এলাকার লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। এবং আরো বলেন যে, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই খাল দখল করে ভবন নির্মাণ করেন। ।
তবে এক টাউট বাটপার প্রকৃতির এক দালাল অবৈধ দখলে সহযোগিতা করছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে জানান, মোঃ মাইনুদ্দিন খালের জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করতেছে, বিষয় টি আমার জানা ছিলো না, তবে পরবর্তীতে খোজ নিয়ে দেখি ঘটনা সত্য, তিনি সরকারি খালের জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করছে, যা আইনত অন্যায় কাজ করছে। এটা মোটেও উচিৎ হয় নি, আমি প্রশাসন কে আহবান করবো, যাতে করে অবৈধ ভাবে খালের জমি দখল করে ভবন নির্মাণ না করতে পারে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে, প্রয়োজনে উচ্ছেদ অভিযান করে সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত করুক।
তবে চানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহাউদ্দীন ঢালী বলেন, বিষয় টি আমার জানা নেই, তবে আমি খোজ নিয়ে দেখবো, তবে সরকারি খাল দখল করে যদি ভবন নির্মাণ করা হয়, তবে তা অবশ্যই অন্যায়। এবং প্রয়োজনে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নুরুননবী বলেন, ‘খাল বা জলাধার দখল করে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে; খালের জমির মধ্যে যদি পাকা ঘর নির্মাণ হয়ে থাকে তা ভেঙে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।
তবে অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণ করার কথা স্বীকার করে নানা যুক্তি দেখান অবৈধ দখলদার মোঃ মাইনুদ্দিন।
Like this:
Like Loading...
নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
Leave a Reply