হিজলায় অর্ধশতাধিক অবৈধ ইট ভাটায় কাঠ খড়ি দিয়ে পোড়ানোর প্রস্তুতি //
-
আপডেট সময় :
রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২
-
৬৬
০ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার //
জেলার হিজলা উপজেলায় ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে অবৈধ ইটভাটার মালিকরা। প্রতি বছরের ন্যায় অনেকে কাঠ খড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো শুরু করেছেন।
তবে অধিকাংশ ইটভাটা গুলোতে এখন চলছে মাটি দিয়ে ইট তৈরীর কাজ। কিছুদিন পরেই পুরোদমে চালু হবে ইট পোড়ানো। আর ইট পোড়ানোর জন্য ইট ভাটার মালিকরা পুর্ববর্তি বছর গুলির ন্যায় এবারেও জ্বালানী হিসেবে কাঠ খড়ি পোড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে।
এ জন্য ইটভাটার মালিকগন গত কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার মন কাঠখড়ি সংগ্রহ করে তাদের ইট ভাটার নিদৃষ্ট স্থানে মজুদ করে রেখেছেন,এখনও কাঠ খড়ি সংগ্রহ অব্যহত রয়েছে।
ভাটা গুলিতে মাটি দিয়ে ইট তৈরী সম্পন্ন হলেই কাঠখড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে পোড়ানো হবে ইট। আর এ ভাবেই চলতে থাকবে ইট পোড়ানোর পুরো মৌসুম।
অপরদিকে দেশের সব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের ব্যবস্থা করতে ও ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধ নিশ্চিত করতে দেশের জেলা প্রশাসকদের সাত দিনের মধ্যে কার্যকর নির্দেশনা দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও পরিবেশসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি এ বিষয়ে অগ্রগতি জানিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে। তবে এবারেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করবেন কি না এ নিয়ে সচেতন মহল সন্দিহান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধভাবে অসংখ্য ইট ভাটা গড়ে উঠেছে যা সংখ্যায় প্রায় অর্ধশতাধিক,যার সিংহভাগ ইটভাটাই ড্রাম চিমনি ব্যবহার হচ্ছে, তারা নদীর চর থেকে মাটি কেটে ইট তৈরি করছে।
ফসলীয় জমি ও বাড়ি-ঘড়ের ভিতরে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ ইট ভাটা গুলো। সরকারের নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি আইন অমান্য করে ইট ভাটা গুলোতে কয়লার বদলে কাঠের স্তুপ রেখে পোড়ানো হয় কাঠ।
যার ফলে বন সম্পদ উজাড় হচ্ছে। এসব এলাকায় পরিবেশ দূষিত যার ফলে রবি শোষ্য,আমের মুকুল সহ সবকিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও হিজলা উপজেলার বড়জালীয়া, মেমামিয়া, হরিনাথপুর ও হিজলা গৌরবদী ইউনিয়নে নদীর তীরে গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ ইটের ভাটা।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বনাঞ্চল উজাড় করে ট্রলি ও ট্রলারযোগে কাঠ এনে ইট ভাটায় ব্যাবহার করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অশাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইট ভাটার মালিকরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক ড্রাম চিমনি ইট ভাটা দেখা গেছে সরেজমিনে।
ইট ভাটা মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়লার দাম বাড়তি থাকায় লাকড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩তে বলা হয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা অর্থাৎ জিগজ্যাগ ক্লিন, হাইব্রিড হফম্যান ক্লিন, ভার্টিক্যাল শফট ক্লিন, টানেল ক্লিন বা অনুরোপ উন্নততর কোনো প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া আবাসিক, জনবসতি,সংরক্ষিত এলাকার বনভূমি ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা করা যাবে না।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র,জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বা লাইসেন্স না নিয়ে ইটভাটা চালু করা যাবে না। আর এ আইন অমান্য করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
আর এসব ইটভাটা তদারকি করার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বন বিভাগ,স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।
কিন্তু তাদের রহস্যজনক নীরবতার কারণে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অধিকাংশ ইটভাটা মালিক এসব আইনের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ বছরও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করবেন কি না এ নিয়ে সচেতন মহল সন্দিহান।
Like this:
Like Loading...
নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
Leave a Reply