পাকিস্তানকে হারিয়ে ভারতের প্রতিশোধ
-
আপডেট সময় :
সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২
-
৮৫
০ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক//
দারুণ বোলিংয়ে ২৫ রানে তিন উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ১৭ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। শেষ ওভারে গড়ানো টানটান উত্তেজনার ম্যাচে এক হার্দিক পান্ডিয়ার কাছে হেরে গেল পাকিস্তান। দুবাইয়ে এশিয়া কাপের রবিবাসরীয় মহারণে দুই বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল ভারত। গত বছর এই মাঠেই টি ২০ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েই এশিয়া কাপ অভিযান শুরু করল রেকর্ড সাতবারের চ্যাম্পিয়নরা। নিকট অতীতে এতটা রোমাঞ্চ ছড়ায়নি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর কোনো ম্যাচ। বরাবরের মতোই উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভরা গ্যালারিতে দুদলেরই সমর্থক ছিল। টি ২০ ক্রিকেটের মারকাটারি ব্যাটিং প্রদর্শনীর দেখা না মিললেও মাঠের লড়াই হলো জমজমাট। ফিফটিবিহীন ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে এক বল বাকি থাকতেই ১৪৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। সেই পুঁজি নিয়েই দারুণ বোলিং পারফরম্যান্সে ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাবর আজমের দল। কিন্তু শেষপর্যন্ত পেরে ওঠেনি তারা। রবীন্দ্র জাদেজার ২৯ বলে ৩৫ রানের কার্যকর ইনিংস ও পান্ডিয়ার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে শেষ হাসি হাসে ভারত। শেষ তিন ওভারে ৩২ ও শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২১ রান। ১৯তম ওভারে ১৪ রান দেন হারিস রউফ। শেষ ওভারে দরকার সাত রান। প্রথম বলেই জাদেজাকে বোল্ড করে ম্যাচ জমিয়ে দেন স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ। পরের দুই বলে আসে মাত্র এক রান। শেষ তিন বলে দরকার ছয় রান। চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে জয়ের আনন্দে ভাসান ম্যাচসেরা পান্ডিয়া।
ক্যারিয়ারের শততম টি ২০ তে ছন্দে ফেরার আভাস দিয়ে ৩৪ বলে ৩৫ রানে থামেন বিরাট কোহলি। অধিনায়ক রোহিত শর্মা করেন ১৮ বলে ১২ রান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই লোকেশ রাহুলকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের অভিষিক্ত পেসার নাসিম শাহ। ওই ওভারেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান কোহলি। দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে বোলারদের দাপটের ম্যাচে নাসিম দুটি ও নওয়াজ নেন তিন উইকেট।
এরআগে আগুন ঝরান ভারতের পেসাররাও। ২৬ রানে চার উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি ২০ তে কোনো ভারতীয় বোলারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন ভুবনেশ্বর কুমার। পান্ডিয়া তিনটি, আর্শদীপ সিং দুটি ও আভেশ খান নেন এক উইকেট। টি ২০ তে এই প্রথম ১০ উইকেটের সবকটি নিলেন ভারতের পেসাররা।
ভারতীয় পেসে নাকাল পাকিস্তানের পক্ষে ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এ ছাড়া ইফতেখার আহমেদ ২২ বলে ২৮ ও শেষ ব্যাটার শাহনেওয়াজ দাহানি করেন ছয় বলে ১৬ রান।
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার আগেই অপ্রত্যাশিত সুখবরে চাঙ্গা ছিল ভারত-শিবির। করোনামুক্ত হয়ে কালই দুবাইয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেন ভারতের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়। মাঠের লড়াইয়ে প্রথম ওভারেই উইকেট পেতে পারতেন ভুবনেশ্বর। রিজওয়ানের বিরুদ্ধে তার এলবিডব্লুর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান রিজওয়ান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পাকিস্তানের ব্যাটিং স্তম্ভ বাবর আজমকে ১০ রানে ফিরিয়ে ভুবনেশ্বরই হানেন প্রথম আঘাত। বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। রানের গতি বাড়াতে রিজওয়ান ও ফখর জামান যখন হাত খুলতে শুরু করেছিলেন, তখনই দ্বিতীয় আঘাত। ষষ্ঠ ওভারে ফখরকে ১০ রানে ফেরান আভেশ। ১০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল দুই উইকেটে ৬৮ রান। তৃতীয় উইকেটে রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের ৪৫ রানের জুটিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তান। ১৩তম ওভারে ইফতিখারকে শর্ট বলে ঘায়েল করে এই জুটি ভাঙেন হার্দিক পান্ডিয়া। ২২ বলে ২৮ রান করে ইফতিখার ফেরার পর নিজের পরের ওভারে আরেকটি শর্ট বলে রিজওয়ানকেও ফিরিয়ে দেন পান্ডিয়া। ৪২ বলে ৪৩ রান করেন রিজওয়ান। ওই ওভারেই আরেকটি শর্ট বলে খুশদিল শাহকে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন পান্ডিয়া। নয় বলের মধ্যে তিন উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে এলোমেলো করে দেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। শেষদিকে রানের জন্য যার দিকে তাকিয়ে ছিল পাকিস্তান, সেই আসিফ আলীকে নয় রানে থামান ভুবনেশ্বর। আর্শদীপ সিংয়ের বলে নওয়াজ আউট হন মাত্র এক রান করে। ১৯তম ওভারে টানা দুই বলে শাদাব খান ও অভিষিক্ত নাসিম শাহকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ভারতের সফলতম বোলার ভুবনেশ্বর। হ্যাটট্রিক বলটি ঠেকিয়ে দেওয়া দাহানির ব্যাটেই শেষ পর্যন্ত ১৪৭ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। দাহানি মাত্র ছয় বলে ১৬ ও হারিস রউফ সাত বলে করেন ১৩* রান।
Like this:
Like Loading...
নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
Leave a Reply