প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ৩:৩০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৭, ২০২২, ১১:০৬ এ.এম
বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা শ্রীনগরে আহত অর্ধশতাধিক

অনলাইন ডেস্ক //
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে শুক্রবার উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম খানকে পেটাচ্ছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা হামলা করেছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে মুন্সীগঞ্জ, নোয়াখালী, নরসিংদী, নেত্রকোনা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় ৫০ জন আহত হয়েছে।
এছাড়া শ্রীনগর সদর অভিমুখে বিএনপির মিছিল পুলিশি বাধার মুখে পড়ে এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপির প্রতিবাদ সভামঞ্চ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা ভাঙচুর করেছে। তাদের হামলায় বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এছাড়া নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির ২৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। নরসিংদীর রায়পুরায় একই স্থানে সভা করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সম্পর্কে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) : শ্রীনগর উপজেলার যশুরগাঁও বাইপাস এলাকায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা চালায়। হামলায় শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম খানসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার আটপাড়া ইউনিয়নের কল্লিগাঁও এলাকায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে শ্রীনগর সদর অভিমুখে রওয়ানা দিলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা ধাওয়া দিলে বিএনপির মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
যশুরগাঁও বাইপাস এলাকায় মিছিলটি পৌঁছলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এ হামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। আহতরা হলেন-শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম খান, জেলা মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক রোকেয়া বেগম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহিরুল আলম মামুন, উপজেলা যুবদলের সভাপতি জয়নাল আবেদীন জেমস, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ রানা, যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ, প্রিন্স বেপারি, শাহ আলম, মিরাজ হোসেন তানিন, হালিম খান টিপু, মো. রনি, মো. আকাশ, কামরুল হাসান, ছাত্রদল নেতা মামুনুর রশিদ মামুন, ফারুক মৃধা, মিরাজ, ফয়সাল রনি, ইমন হাসান, তানভির হাসান প্রমুখ।
শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের মিছিলে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের নারী নেত্রীসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আমরা শ্রীনগর সদরের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের মিছিলের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের উদ্যোগে তিনদোকান এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়।
শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী তোফাজ্জল হোসেন জানান, বাইপাস এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা অরাজকতা ও বাস ভাঙচুর করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়া হয়। এতে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, বিএনপি ও ছাত্রলীগের একই স্থানে কর্মসূচি ছিল। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে বিএনপি নেতা হাফিজুল ইসলাম খানসহ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।
জানা গেছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে শ্রীনগর ছনবাড়ী আন্ডার পাসের নিচে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন। এতে শত শত নেতাকর্মী জড়ো হয়।
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : বাঁশখালী উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে ধাওয়া ও পালটাধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটা করে। এ সময় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে আলোচনা সভা শেষে উপজেলা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় তারা প্রধান সড়কে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতাহাতি হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এরপর ঘণ্টাখানেক দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহতদের মধ্যে রয়েছেন-সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, বাঁশখালী থানার (ওসি) কামাল উদ্দীন, ওসি (তদন্ত) আরিফুর রহমান, এএসআই নজরুল ইসলাম।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ আমাদের কোথাও সমাবেশ করতে দেয়নি। পরে আমার বাড়িতে সমাবেশ করি। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কিছু দূর গেলে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন করির জানান, বিএনপি নেতাকর্মীদের উসকানিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
নোয়াখালী : চাটখিল আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে বিএনপির প্রতিবাদ সভামঞ্চ ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর
প্রকাশক ও সম্পাদক : ফয়সাল হাওলাদার।
Copyright © 2025 মেহেন্দিগঞ্জ টাইমস ।। Mehendiganj Times. All rights reserved.