প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ৩:১৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১০, ২০২১, ১২:২৪ পি.এম

অনলাইন ডেস্কঃ
রাজশাহীর ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আলম (ইনসেটে) হত্যা মামলার রায়ের পর বৃহস্পতিবার আসামিদের কারাগারে নেওয়া হচ্ছে -যুগান্তর
রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আলম ওরফে শাহেন শাহ হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসি ও ২২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তেরোবার পেছানোর পর বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওএইচএম ইলিয়াশ হোসেন এ রায় দেন। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও শাহেন শাহের ভাই মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আকতার নাহান। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ৩১ জনই আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে আবু তাহের ওরফে জাহের হত্যা মামলায় তারই দুই সহোদরসহ ৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
রাজশাহীতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর রহমান এবং হাসানুজ্জামান হিমেল, তৌফিকুল ইসলাম চাঁদ, মোহাম্মদ মসহিন, সাইরুল ইসলাম, রজব আলী, বিপ্লব হোসেন, আব্দুল মোমিন ও আরিফুল ইসলাম। তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর হড়গ্রাম কোর্ট এলাকায়।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মাহাবুল আলম, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুস সাত্তার, রঙ লাল হোসেন, হাসান আলী, মাসুদ হোসেন, মোহাম্মদ রাজা, গোলাম মোর্তুজা, সুমন আলী, আসাদুল ইসলাম, আকতারুল ইসলাম, জাইদুল হক, ফরমান আলী, টি আলম, মোহাম্মদ রাজু, আকবর হোসেন, মোহাম্মদ সম্রাট, লাল মোহাম্মদ লালু, আজাদ আলী ও মাসুম হোসেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এ মামলার বাদী ও নিহত শাহীনের ভাই মহানগর যুবলীগ নেতা নাহিদ আকতার নাহান বলেন, এই রায় বহুপ্রতীক্ষিত। আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এমনভাবে আর কাউকে যেন স্বজন হারাতে না হয়, সেই দোয়া করি।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট দুপুরে রাজশাহী কোর্ট কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী শাহীন আলম ওরফে শাহেন শাহকে (৩৪) নগরীর গুড়িপাড়ার ক্লাব মোড় এলাকায় নৃসংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরে শাহীনের নিথর দেহকে পুকুরে নিক্ষেপ করা হয়। পরদিন তার ভাই যুবলীগ নেতা নাহিদ আকতার নাহান বাদী হয়ে ২৫ জনকে আসামি করে রাজপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে রাজপাড়া থানার এসআই মনিরুজ্জামান ২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনুসর রহমানসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। মামলাটি রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে গত বছর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর হয়। এক বছর ধরে মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় ছিল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক-২ যুগান্তরকে বলেন, অভিযোগ নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিয়েছেন। এই রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। আদালতে সরকারি পক্ষের আইনজীবী মোসাব্বিরুল ইসলাম বলেন, এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। কেউ অপরাধ করে যে পার পায় না, এ রায়ে সেটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আমরা এ আদালতে ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
জয়পুরহাটে দুই সহোদরসহ তিনজনের ফাঁসি : জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে আবু তাহের ওরফে জাহের হত্যা মামলায় তারই দুই ভাইসহ তিনজনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন আক্কেলপুর উপজেলার আউয়ালগাড়ি গ্রামের মৃত তাছেম উদ্দীন মণ্ডলের ছেলে সেকেন্দার ও শহিদুল এবং উলিপুর গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দীনের ছেলে বাবু মিয়া।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আক্কেলপুর উপজেলার আউয়ালগাড়ি গ্রামে জমিজমা ও গাছকাটা নিয়ে বড় ভাই আবু তাহেরের সঙ্গে তারই দুই ভাই সেকেন্দার ও শহিদুলের বিরোধ ছিল। এর জের ধরে ২০০৭ সালের ১ মার্চ মধ্যরাতে আসামিরা তার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে স্ত্রী ও ছেলেকে বেঁধে রেখে আবু তাহেরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের শ্বশুর আশরাফ আলী মণ্ডল বাদী হয়ে আক্কেলপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ২৩ মে আক্কেলপুর থানার তৎকালীন এসআই আনছারি জিন্নাত ও মোজাফ্ফর হোসেন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার এ মামলায় রায় ঘোষণা করা হলো।
প্রকাশক ও সম্পাদক : ফয়সাল হাওলাদার।
Copyright © 2025 মেহেন্দিগঞ্জ টাইমস ।। Mehendiganj Times. All rights reserved.