চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচন: সংঘর্ষ ও অনিয়মের দায় এড়াতে পারে না ইসি
-
আপডেট সময় :
মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
-
২৮৭
০ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক //
বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, কেন্দ্র দখল ও বর্জনের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সংঘর্ষে চট্টগ্রামের পটিয়ায় খুন হয়েছেন এক কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই। কোথাও কোথাও গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে, আগের তিন ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের মতো চতুর্থ ধাপও সংঘর্ষ ও অনিয়মমুক্ত থাকতে পারেনি। আগের তিন ধাপের মতো চতুর্থ ধাপেও নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ব্যাপকভাবে বিজয়ী হয়েছেন বটে, তবে নির্বাচন বিতর্কমুক্ত থাকেনি। নির্বাচনের দিন বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষ-সংঘাত হয়েছে। অনেক স্থানে ভোটকেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক সচিত্র প্রতিবেদন বলছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম কালো পর্দার বাইরে রেখে ভোটারদের নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। বিভিন্ন কেন্দ্রে দেখা গেছে এমন চিত্র। এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে দেশের বেশ কয়েকটি পৌরসভায় বিরোধী দলের প্রার্থীরা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন। আমরা মনে করি, পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব অনিয়ম হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে সেগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় যাতে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি না-ঘটে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, সেগুলোর নিষ্পত্তি করাও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু লক্ষ করা যায়, অধিকাংশ অভিযোগই অনিষ্পন্ন থেকে যায়। নির্বাচনের দিন সহিংসতার যেসব ঘটনা ঘটে, পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় সেগুলোর যাতে পুনরাবৃত্তি না-ঘটে, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দল এবং ভোটারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরও একটি বিষয় লক্ষণীয়। গত তিন ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের মতো চতুর্থ ধাপেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা অস্বাভাবিক হারে বিজয়ী হয়েছেন। এ ধাপে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা যেখানে ৫৫টির মধ্যে ৪৮টিতে জয়ী হয়েছেন, সেখানে একজন মাত্র বিএনপি প্রার্থী জয় পেয়েছেন। তৃতীয় ধাপে ৬৩টি পৌরসভা নির্বাচনের মধ্যে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা যেখানে ৪৬টিতে জয় পেয়েছিলেন, সেখানে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন মাত্র তিনটি মেয়র পদে।
দ্বিতীয় ধাপে ৬০টি পৌরসভা নির্বাচনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪৬ জনের বিপরীতে বিএনপির চারজন মেয়র নির্বাচিত হন। আর প্রথম ধাপের ২৪টি পৌরসভা নির্বাচনে ১৯টিতে আওয়ামী লীগ ও দুটিতে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হন। এর বাইরে অন্য পৌরসভাগুলোয় যারা মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।
নির্বাচনের সার্বিক এই চিত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তার কতটা বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে না হওয়ার দায় এড়াতে পারে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বস্তুত নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং ভোট প্রদান নির্বিঘ্ন করার দায়িত্ব নির্বাচনের কমিশনের। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন, নির্বাচন কমিশনের তা-ই করা উচিত।
Like this:
Like Loading...
নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
Leave a Reply