প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ৪:২৬ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৭, ২০২২, ৫:২৫ এ.এম
বোয়ালখালীতে অনাবাদি পড়ে আছে ১ হাজার ৯শ হেক্টর কৃষি জমি

এম মনির চৌধুরী রানা//
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তাগাদা দিচ্ছেন এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে অথচ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় এই চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বোয়ালখালীতে ফসলি জমির পরিমাণ ১৬ হাজার ৯২০ একর। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে অনাবাদি হয়ে পড়েছে ১ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমি।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, বোয়ালখালীতে নীট আবাদি জমির পরিমাণ ১৬ হাজার ৯২০ একর। এর মধ্যে এক ফসলী জমির পরিমাণ ৩ হাজার ৫৩২ দশমিক ৪০ একর, দুই ফসলী জমির পরিমাণ ১২ হাজার ১৫২ দশমিক ৪০ একর, তিন ফসলী জমির পরিমাণ ১ হাজার ১৩৬ দশমিক ২০ একর। অনাবাদি হয়ে পড়েছে ১ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চট্টগ্রাম জেলায় ফসলি জমির পরিমাণ ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৭ হেক্টর। এরমধ্যে চাষযোগ্য জমি ২ লাখ ৭ হাজার ২৯ হেক্টর। আর চাষযোগ্য পতিত জমি (অনাবাদি) ১৫ হাজার ২১৩ হেক্টর। স্থায়ী পতিত জমি ১৮ হাজার ১৩৩ হেক্টর। জমি ব্যবহারের ঘনত্ব ৪০ শতাংশ। কৃষি বিভাগের হিসাবে চাষযোগ্য ৬৮ হাজার ২ একর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না।
অনাবাদি বিস্তীর্ণ জমিতে এখন কচুরিপানা আর আগাছা। এক দশক আগেও এসব জমিতে আমন চাষাবাদসহ বিভিন্ন রকমের শাকসবজির চাষ হতো। মাঠজুড়ে ছিল বিভিন্ন ফসলের সমারোহ।
উপজেলা কৃষি অফিসের হিসেব মতে, উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়নে প্রায় ১৩২ একর, পশ্চিম গোমদন্ডীইউনিয়নে প্রায় ২৭১ একর, পৌরসভায় প্রায় ৩৭০ একর, শাকপুরা ইউনিয়নে প্রায় ৩২১ একর, সারোয়াতলী ইউনিয়নে প্রায় ২৭১ একর, পোপাদিয়া ইউনিয়নে প্রায় ৯৮ একর, চরণদ্বীপ ইউনিয়নে প্রায় ৫০ একর, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নে প্রায় ৫০ একর ও আমুচিয়া ইউনিয়নে প্রায় ৫০ একর জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। অনাবাদি এসব জমিতে আমন মৌসুমে ২ হাজার ৫ শত মেট্রিক টন থেকে ৩হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতো। এছাড়া রবি শস্য বা সবজি উৎপাদন হতো ৫ হাজার মেট্রিক টন।
বিপুল এ জমিতে চাষ না হওয়ার কারণ হিসেবে জলাবদ্ধতা ও কৃষকদের অনীহাকে দায়ী করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ।
অনাবাদি এ জমিগুলো পুনরায় চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে এলাকায় কর্মসংস্থান বাড়বে। এর পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। যা জাতীয় পর্যায়ে খাদ্য ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে।
সরেজমিনে উপজেলার চরণদ্বীপ, কধুরখীল, পোপাদিয়া, পশ্চিম গোমদন্ডী, শাকপুরা ও সারোয়াতলী ইউনিয়নে দেখা যায়, এক সময় এসব এলাকার জমিতে চাষাবাদ হলেও বর্তমানে জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ হচ্ছে না।
কধুরখীল ইউনিয়নের কৃষক সুনীল দে বলেন, কধুরখীল কৃষ্ণ দিঘির পাড় সংলগ্ন হদর বিল ও মুরাদ মুন্সীর হাট বিলে দীর্ঘদিন ধরে কোনো চাষবাদ হচ্ছে না। স্থায়ী জলাবদ্ধতার ফলে আগাছা জন্মেছে, বেড়েছে ইঁদুর ও জোঁকের উপদ্রব।
পশ্চিম গোমদন্ডী ইউনিয়নের কৃষক মফিজুর রহমান ও আহম্মদ নবী বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে তাঁরা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণ ও পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিগত কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে মৌখিক ও লিখিতভাবে বলার পরও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করলেন তাঁরা।
প্রকাশক ও সম্পাদক : ফয়সাল হাওলাদার।
Copyright © 2025 মেহেন্দিগঞ্জ টাইমস ।। Mehendiganj Times. All rights reserved.