প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ৩:১৮ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৯, ২০২২, ১২:৫৮ পি.এম
খালেদা জিয়া আবারও হাসপাতালে

অনলাইন ডেস্ক//
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাতেই তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
টানা ১৩ দিন হাসপাতালে থাকার পর ২৪ জুন বাসায় ফিরেছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তার দুই মাস পর আবারও হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি। এ নিয়ে মোট ছয় দফায় এভারকেয়ারে ভর্তি করা হলো।
এর আগে রাত পৌনে ৮টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওয়ানা হন খালেদা জিয়া। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দর ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। এদিকে খালেদা জিয়ার হাসপাতালে যাওয়ার খবরে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা গুলশানের বাসভবন ফিরোজার সামনে ভিড় করেন। তারা খালেদা জিয়ার গাড়ির সঙ্গে হাসপাতাল পর্যন্ত যান।
এর আগে ২২ আগস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কয়েকটি পরীক্ষা শেষে গুলশানের বাসায় ফিরে যান তিনি। ওইদিন গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসার সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাতটি পরীক্ষা করানো হয়। এর আগে পরীক্ষায় ম্যাডামের হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। একটিতে রিং লাগানো হয়। বাকি দুটির চিকিৎসা হবে। এনজিওপ্লাস্টির পর ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুটিন চেকআপ করাতে হয়। সেজন্য ইসিজি, ইকো, আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে করানো হয়। এছাড়া রক্তের বেশ কয়েকটি পরীক্ষাও করানো হয়। চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বছরের এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর জুন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফা বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে ভর্তি করা হয়। টানা দুই সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সবশেষ ২৪ জুন বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ১০ জুন গভীর রাতে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি রিং পরানো হয়। চিকিৎসকেরা তখন তার হৃদযন্ত্রে আরও ব্লক ধরা পড়ার কথাও জানিয়েছিলেন। এর আগে ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। ৭৮ বছর বয়সি খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছর ১৩ নভেম্বর ভর্তি হওয়ার পর ৮১ দিন হাসপাতালে থেকে এ বছর ১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন। এ সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার লিভার সিরোসিস হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা। কয়েক দফা তার রক্তক্ষরণও হয়েছিল। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টায় তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। এরপর ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৩ দিন চিকিৎসা শেষে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। সে সময় তাকে আইসিইউতে পর্যন্ত যেতে হয়েছে। এছাড়াও প্রথম দফায় গত ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ২৬ দিন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর কয়েকদফা তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু প্রতিবারই তা নাকচ করে দেয় সরকার।
প্রকাশক ও সম্পাদক : ফয়সাল হাওলাদার।
Copyright © 2025 মেহেন্দিগঞ্জ টাইমস ।। Mehendiganj Times. All rights reserved.